বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই: প্রধানমন্ত্রী


যত বাধা-বিঘ্ন আসুক তা অতিক্রম করার ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষ রাখে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কারণ, সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি।
তিনি বলেন, হয়তো এই করোনাভাইরাসটা না আসলে আমরা আরো অনেক কাজ করতে পারতাম। তারপরেও যত বাধা-বিঘ্নই আসুক সেটা অতিক্রম করার মতো ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষ রাখে। সে জন্য বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে যাওয়ার আগে দেশ ও জনগণের জন্য ভাল কিছু করে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও ব্যক্ত করেন।
২৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে ৭৪তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানালে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা-মা সব হারিয়ে রিক্ত, নিঃস্ব হয়ে এ দেশে কাজ করা, এটা খুবই কঠিন। কিন্তু তারপরেও শুধু একটা কথা চিন্তা করেছি- যে দেশটাকে এবং দেশের মানুষকে আমার বাবা এত ভালবেসেছেন তাদের জন্য আমাকে কিছু করে যেতে হবে। তার (জাতির পিতা) স্বপ্নটা যেন অপূর্ণ না থাকে সেটা যেন পূর্ণ করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকটি ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সেটাই জাতির পিতা চেয়েছিলেন, ছোটবেলা থেকেই তার এই আকাঙ্ক্ষা আমরা জানি, শুনেছি। সে কারণে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি- এ দেশটাকে যেন জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে ঐটুকুই আমার প্রচেষ্টা আর কিছু না’।
শেখ হাসিনা তার ৭৪তম জন্মদিনে সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘সবার কাছে দোয়া চাই যতদিন বেঁচে আছি যেন সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে পারি। আর আমার কাজ দ্বারা বাংলাদেশের মানুষের যেন উপকার হয় এবং মানুষ যেন ভালো থাকে সেই কাজটুকু যেন করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় রবিবার রাতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং বলেন, ‘তার জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও মেধা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার মৃত্যু আমাদের তথা রাষ্ট্রের জন্য এক বিরাট ক্ষতি।’
মাহবুবে আলমের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় এবং ধীর স্থিরভাবে সবকিছু বিবেচনা করতেন। অনেক জটিল মামলার তিনি ভালোভাবে সমাধান করেছিলেন। গত কয়েকটা বছরে অনেক চড়াই-উৎড়াই পার হয়ে আমরা এ জায়গাটায় এসেছি। এ সময় বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত যথাযথভাবে মোকাবেলা করেই তিনি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে তিনি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, মাহবুবে আলম আমাদের ছেড়ে আজকে চলে গেলেন। তার শূন্যস্থান পূরণ করা কঠিন একটা কাজ। আমরা গভীর শোক জানাচ্ছি এবং মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে আমরা শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছি’।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ৭৩ পেরিয়ে ৭৪ বছরে পা দিয়েছেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উদযাপন নিয়ে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের কাছে জানতে চান সাংবাদিকেরা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, কোনো রকম কোনো আনুষ্ঠানিকতা না করার জন্য। যারা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, উনার জন্য দোয়া কামনা করেছেন, উনার সফলতা কামনা করেছেন। উনি (প্রধানমন্ত্রী) পারসনালি এটা উদযাপন করতে চান নাই।’