স্বাস্থ্যবিধি মানার ‘উপায় নেই’ গণপরিবহনে


সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিন থেকেই গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া বাদ দিয়ে আগের মতো স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত রাখা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। চালক, শ্রমিক, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার ‘উপায় নেই’ তাদের।
বিশেষ করে অতিরিক্ত যাত্রী না তোলার বিষয়টি কড়াকড়িভাবে পালনের নির্দেশ থাকলেও যাত্রী-শ্রমিক কেউ তা মানছেন না। কোনো পরিবহনে শ্রমিকরা জোর করে অতিরিক্ত যাত্রী তুলছেন আবার কোনো পরিবহনে যাত্রীরাই জোর করে উঠছেন। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেও কেউ কেউ তা মানছেন না বলে দেখা গেছে।
সড়কে অফিসগামী মানুষের প্রচুর ভিড়। প্রতিটি বাস যাত্রী বোঝাই। এ সময় যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা কম থাকায় অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। বাস না পেয়ে কেউ কেউ জোর করে যাত্রী বোঝাই পরিবহনে ওঠার চেষ্টা করেছেন। এ সময় বাসের অন্য যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা বাধা দিলে কথা শোনেননি অফিসগামী মানুষ। বাসের বিড়ম্বনা এড়াতে অনেকে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করেছেন।
সকালে যাত্রী চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। অধিকাংশ বাসে যাত্রী ছিল অনেক কম। অর্ধেক আসনেও যাত্রী ছিল অনেক বাসে।
মোহাম্মদপুর থেকে বনশ্রী পর্যন্ত চলাচলকারী তরঙ্গ প্লাস বাসের একজন চালক বলেন, ‘সকাল আর সন্ধ্যা ছাড়া বাসে তেমন যাত্রী পাওয়া যাইতেছে না। আমরা দাঁড়িয়ে লোক না নিতে চাইলেও অনেক যাত্রী ধাক্কা মাইর্যা উইঠ্যা পড়ে। কিন্তু সবাই দোষ দেয় আমাদের। বাস চালাইয়া মালিক-শ্রমিক কারও তেমন আয় হইতাছে না। স্প্রে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হাত ধোয়ার সাবান এসব বাড়তি খরচ করলে আমগোর প্যাট ধইরা টান দিতে হইব’।
এদিকে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে শাস্তি দেওয়া হবে-সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন ঘোষণার পরও বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ বিষয়ে বলেন, বাসে যাতে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করে এ জন্য আমরা চিঠি দিয়ে সব মালিককে জানিয়েছি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিও প্রতিপালনের জন্য বলেছি। তারপরও যদি কেউ এসব না মানে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলব যাতে সংশ্লিষ্ট বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
বাসে স্বাস্থ্যবিধি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মোহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিদিন আমাদের ১০-১২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। সংশ্লিষ্ট পরিবহনের বিরুদ্ধে জরিমানার পাশাপাশি যানবাহনের কাগজপত্রও জব্দ করা হচ্ছে।