বিরতিটার খুব দরকার ছিল: তিশা


টানা ছয় মাস করোনাকালের সঙ্গনিরোধের বিধি মেনে বাসায় থাকার পর ২২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার থেকে শ্যুটিংয়ে ফিরলেন ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। অভিনয়জীবনে এমন দীর্ঘ বিরতির দরকার ছিল উল্লেখ করে তিশা বললেন, ‘একটানা শ্যুটিংয়ের ব্যস্ততার ফাঁকে এ বিরতিটার খুব দরকার ছিল। এ বিরতি ছিল নিজেকে বোঝার ও জানার জন্য।’
গত মাসেই তিশা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্যুটিংয়ে ফিরবেন। সেজন্য একটু একটু প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ প্রস্তুতির তালিকায় ছিল ফটোশ্যুট ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কাজগুলোকে সীমিত পরিসরে নিয়ে আসা।
এত সময় নেওয়ার কারণ কী জানতে চাইলে তিশা বলেন, ‘কাজে তো একদিন ফিরতেই হবে। আমার মনে হয়েছে, শ্যুটিং ইউনিটগুলো এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্যুটিং শুরু করেছে। এভাবে আর বাসায় বসে থাকা যায় না। কমিটমেন্টের জায়গায় বাধা সবকিছু।’ শ্যুটিংয়ে ফেরার জন্য তাকে বাড়তি প্রস্তুতি হিসেবে স্যানিটাইজার ও মাস্ক কিনতে হয়েছে। দীর্ঘদিন পর শ্যুটিংয়ে ফেরার মানসিক প্রস্তুতির বয়ান দিয়ে তিশা বলেন, ‘অনেক দিন পর কাজ শুরু করছি, এ নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। মানসিকভাবে শক্ত হয়েই কাজে ফিরেছি।’
গত ২২ মার্চ থেকে ছোট পর্দার সব শ্যুটিং বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিশা। ছয় মাস পর গতকাল পুবাইলের একটি শ্যুটিং স্পটে কাজ শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর কাজে নেমে কেমন লাগছে? জবাবে তিশা বলেন, ‘আমি একজন পরিচালকের সঙ্গে থাকি। সেজন্য ক্যামেরা, ডিরেকশন, স্ক্রিপ্ট বা আইডিয়ার সঙ্গেই ছিলাম। তবে অনেক দিন পর ইউনিটের সঙ্গে বেশ ভালো সময় কাটছে।’ করোনার আগে এবং পরে কাজের ক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলো নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগে যেমন নিজেদের মতো করে ধুপধাপ করে শ্যুটিংয়ে আসা, হইহুল্লোড় করে শ্যুটিং করতাম, সেই পরিবেশটা এখন আর নেই। এখন প্রতিমুহূর্তে করোনা নিয়ে সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’
করোনার আগে একের পর এক নাটক ও চলচ্চিত্রের শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিবারকে খুব একটা সময় দেওয়া হতো না তিশার। সেই অভিযোগ এবার ঘুচিয়ে দিয়েছে করোনা। বলছিলেন, ‘আগে তো পরিবারকে সেভাবে সময় দিতে পারতাম না। করোনায় সেই সুযোগটা হয়েছে। বাসায় সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। অনেক বই পড়েছি, মুভি দেখেছি। প্রচুর স্ক্রিপ্ট পড়েছি, বাগান করেছি, সেলাই করেছি। হাতের আরও কাজ করেছি।’
সাজিন আহমেদের লেখা ও সকাল আহমেদের পরিচালনায় ‘রাত গভীর হয়’ নাটক দিয়ে কাজে ফিরলেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। গল্পে চাচাতো ভাইবোনের চরিত্রে দেখা যাবে মোশাররফ করিম ও তিশাকে।
তিশা অভিনীত চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ জাপানের ফুকুওয়াকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘কুমামোটো সিটি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। খবরটি ফেইসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছেন এর পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। গতকাল থেকে জাপানের ফুকুওয়াকা শহরে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে আগামীকাল পর্যন্ত। করোনাভাইরাসের কারণে সীমিত পরিসরে আয়োজিত হচ্ছে এই উৎসব। তাই জাপানের বাইরের অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে ফারুকী বলছিলেন, ‘আমাদের মুভিটি নির্বাচনের জন্য ফুকুওয়াকাকে ধন্যবাদ। ভোট দেওয়ার জন্য দর্শকদেরও ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে মুভির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদেরও ধন্যবাদ।’
যদিও বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা কুড়াচ্ছে চলচ্চিত্রটি কিন্তু দেড় বছরেও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে আটকে আছে এটি। ‘শনিবার বিকেল’ গুলশান হামলার ঘটনাকে উপজীব্য করে নির্মিত। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে এমন আশঙ্কায় মুভিটির সেন্সরশিপ আটকে দেয় সেন্সর বোর্ড। আপিলের পরও ছাড়পত্রের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।