কোম্পানীগঞ্জের এক কিংবদন্তী ছাত্র নেতার নাম ” সিরাজ “


আজকের কোম্পানীগঞ্জের নতুন প্রজন্মের মধ্যে নামটি হয়ত তেমন পরিচিত নয়। কোম্পানীগঞ্জের ছাত্র রাজনীতির স্বর্ণযুগ ছিলো আশির দশক।এই সময়ের অন্যতম একজন ছাত্র নেতার নাম ছিলো সিরাজ। আগে থেকেই ছাত্র শিবির, জাসদ ছাত্রলীগ, মুজিববাদী ছাত্রলীগের শক্তিশালী অবস্থান ছিলো কোম্পানীগঞ্জের ছাত্র রাজনীতির তীর্থস্হান সরকারি মুজিব কলেজে। নতুন একটা ছাত্র সংগঠন শূন্য থেকে দাঁড় করানো কোন সহজ ব্যাপার ছিলো না।
সিরাজ ভাই জাতীয় পার্টি সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ” ছাত্র কল্যাণ” কে অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতায় শুধু দাঁড়ই করেননি, খুব অল্প সময়ে কোম্পানীগঞ্জের ছাত্র রাজনীতিতে ” ছাত্র কল্যাণ” কে পরিণত করেন অপরাজেয় ও জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠনে। সিরাজ ভাই-এর আরেকটি বড় গুণ ছিলো রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও অন্য সংগঠনের নেতাদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়তে দেননি। আজকে মারামারি করে কালকে আবার ওদের সাথে আড্ডা দিতে কোন সমস্যা হয়নি। রাজনীতির বাইরে সিরাজ ভাই ছিলেন একজন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়াসংগঠক। ছিলেন দারুন একজন ফুটবলার। যে কোন ক্রীড়া টুর্নামেন্টে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন নিজেকে উজাড় করে।
একটা দূর্ঘটনা সিরাজ ভাই এর রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে দেয়। প্রবাস জীবন বেচে নিতে বাধ্য হন তিনি। ছাত্র কল্যানের অভ্যন্তরিন কোন্দলে খুন হন ছাত্র নেতা শাহাবুদ্দিন মনা। সত্য কখনো চাপা থাকে না। ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এই হত্যাকান্ডে সিরাজ ভাই ও উনার পরিবারের কারো কোন হাত ছিলো না। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতা হওয়ার এর খেসারত দিতে হয়েছে সিরাজ ভাই ও উনার পরিবারকে।
সিরাজ ভাই হারিয়েছেন প্রিয় স্বদেশ,কোম্পানীগঞ্জ ও বসুর হাট কে। পারিবারিক কারণে খুব কাছ থেকে সিরাজ ভাই কে দেখেছি। খুব স্নেহ করতেন আমাকে। এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে, পেয়াজু খুব পছন্দ করতেন উনি এবং দেখা হলে দু’হাতে দুটো ধরিয়ে দিতেন। কত বছর সিরাজ ভাই কে দেখি না। যেখানেই থাকুন সুস্থ ও ভালো থাকুন প্রিয় সিরাজ ভাই।